আবগারি বিভাগ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ আবগারি দপ্তর সরকারের প্রধান রাজস্ব আদায় করি দপ্তর গুলোর মধ্যে অন্যতম। দপ্তর টি মূলত পরিচালিত হয় কলিকাতাস্থিত আবগারি অধিদপ্তর থেকে। প্রতিটি জেলায় দপ্তরটি কাজ করে মাননীয় জেলা শাসক জেলা সমাহর্তা মহাশয় এর অধীনে। এই দপ্তরের অন্যতম কাজ হলো দেশি ও বিদেশি মদ তৈরির উপকরণ গুলি তৈরি, রক্ষণ, বিতরণ, স্থানান্তরকরণ, যোগান ,ক্রয় , বিক্রয়ের উপর নজরদারি করা এবং রাজস্ব আদায় করা। আবগারি দপ্তর যেমন একদিকে সরকার অনুমোদিত দেশী ও বিদেশী মদ বিক্রয়ের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করে তেমনি বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে অবৈধ মদ উৎপাদন বন্ধ যোগানের উপর সর্বদা নজরদারি করে। দপ্তরটি সমাজের কোন ব্যক্তিকেই মদ্যপানে উৎসাহিত করে না কিন্তু কোন মদ্যপায়ী ব্যক্তি অবৈধ মদ পান না করে সেদিকে সর্বদা খেয়াল রাখে এবং মদ্যপান কারীদের বৈধ দেশি ও বিদেশি মদ যোগানের ব্যবস্থা করে।
- নিম্নলিখিত কর্মপন্থার মাধ্যমে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করে:
- অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে নতুন দেশী, বিদেশী মদ উৎপাদনকেন্দ্র, পাইকার ও খুচরো বিক্রয়ের লাইসেন্স প্রদান করেন।
- বিভিন্ন পরিচিতি মূলক বোতলজাত মদের নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে নিবন্ধীকরণ এবং নিবন্ধীকৃত পরিচিতিমূলক মদ যাতে ঠিকমত ক্রয়-বিক্রয় হয় সেদিকে নজর রাখা।
- দেশী ও বিদেশী মদ তৈরির কাঁচামাল রাজ্যসভায় স্থানান্তরকরণ এর ব্যবস্থা করে।
- দেশি ও বিদেশি মদের উৎপাদন, বিতরণ ও বিক্রয়ের উপর রাজ্য সরকার আরোপিত অন্ত শুল্ক ফি ও অন্যান্য কর আরোপের পদ্ধতি নির্ধারণ করে।
- অবৈধ মদের উৎপাদন, পরিবহন ও বিক্রয়ের উপর সর্বদা নজরদারি করে।
- চেতনানাশক দ্রব্যের উৎপাদন, বিতরণ , বিক্রয় এবং মজুদ রাখার উপর নজরদারি করে।
- চিকিৎসক নানা শিল্প কাজে ব্যবহৃত মাদকদ্রব্য ও স্পিরিট এর সরবরাহ ও বিতরণ এবং বিক্রয় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স অনুমতি পত্র প্রদান করে।
মালদা আবগারি বিভাগ মাননীয় জেলাশাসক ও জেলা সমাহর্তার অধীনে কাজ করে। আবগারি দপ্তরের বিভিন্ন শাখা ইউনিট গুলির মাধ্যমে উপরে উল্লেখিত লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। এই শাখা ইউনিট গুলির অফিসার ও কর্মীরা সর্বদা বৈধ মদের যোগান , স্থানান্তরকরণ এবং অবৈধ মদের উৎপাদন, যোগান, বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। B.E.Act, 1909 (বেঙ্গল এক্সাইজ অ্যাক্ট 1909) এবং N.D.P.S. আইন 1985 ( নারকোটিক ড্রাগস এবং সাইকোট্রপিক পদার্থ আইন, 1985 ) উল্লেখিত ধারা সমূহের মাধ্যমে অফিসার ও কর্মীরা নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ করে। তাছাড়া অবৈধদের কুপ্রভাব এবং এর জন্য প্রচলিত আইনে প্রদত্ত শাস্তি সমূহ সম্বন্ধে জনগণের মধ্যে সচেতনার উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার অভিযান চালায়। তপশিলী উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় নিয়মিত প্রচার অভিযানের মাধ্যমে উল্লেখিত এলাকার জনসাধারণকে অবৈধ মদের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হয় এবং প্রতিরোধ মূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিয়মিত অবৈধ মদ ধ্বংস করা হয়। সম্প্রতি মালদা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ মদের ব্যবসায় নিযুক্ত উপজাতি ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প জীবিকা গ্রহণের প্রস্তাব গৃহীত হয় তা অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অতীতে মালদা জেলার অবৈধ পোস্ত চাষের আঁতুড়ঘর ছিল। আবগারি দফতরের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের সার্বিক প্রচেষ্টায় ২০১৫-২০১৬ সালে অবৈধ পোস্ত চাষ নির্মূল করা হয় এবং তৎকালীন জেলা শাসক মহাশয় এর পক্ষ থেকে মালদা জেলা কে প্রস্থ চাষ শূন্য জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে মালদা জেলা প্রশাসন ও জেলাকে পোস্ত চাষ শূন্য জেলার তকমা ধরে রাখার জন্য মালদা জেলা আবগারি দফতরের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহায়তায় প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং গত আর্থিক বছর পর্যন্ত মালদা জেলাকে পোস্ত চাষ শূন্য হিসেবে ধরে রাখা গেছে এবং চলতি আর্থিক বছরে ও যাতে মালদা জেলা কে পোস্ত চাষ শূন্য জেলা হিসেবে ধরে রাখা যায় সে জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু হয়ে গেছে।